• শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫, ১১:২৪ পূর্বাহ্ন
  • ইপেপার

মাওলানা সাদকে আনার চেষ্টা করলে ঠেকানোর ঘোষণা মহাসম্মেলন থেকে

প্রকাশক / ৭৭
মঙ্গলবার, ৫ নভেম্বর, ২০২৪
Oplus_131072

ভারতের মাওলানা সাদকে বাংলাদেশে আনার চেষ্টা করলে ঠেকানো হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন তাবলিগের সাধারণ সাথী ও কওমিপন্থী আলেম-উলামারা।

মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সকাল ৯টা থেকে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত ইসলামি মহা-সম্মেলনে বক্তব্য রাখা আলেম-উলামারা এ কথা বলেন।

এ সময় আলেম-উলামারা অভিযোগ করে বলেন, সাদপন্থীরা হচ্ছে আওয়ামী লীগের দোসর। আওয়ামী লীগ চলে গেলেও তারা এখন বর্তমান সরকারের উপদেষ্টাদের ভুল বোঝানোর চেষ্টা করছে। ইসলামকে বিভক্ত করার চেষ্টা করছে। যদি মাওলানা সাদকে দেশে এনে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করা হয়, তাহলে এই দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমান মানুষ সেটা মেনে নেবে না।

দেশ বরেণ্য আলেম মাওলানা নুরুল ইসলাম ওলীপুরী বলেন, সাদ স্বঘোষিত তাবলিগের আমির বলে ঘোষণা দেয়। কোরআন হাদিস, আলেম-উলামা, আল্লাহর অলি, নবী ও স্বয়ং আল্লাহর বিরুদ্ধে কুফরি বক্তব্য দিতে থাকে৷ তাই সারা বিশ্বে তাবলিগের মূলধারা তাকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করে। সাদের অনুসারীরা হচ্ছে কাদিয়ানী গ্রুপ। তারা ইসলামের মূলধারায় বিভক্তি সৃষ্টি করছে। তাবলিগের নামে কাদিয়ানীদের সব কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। কাদিয়ানিরা বাংলাদেশে অবাঞ্চিত।

নরসিংদীর জামিয়া কোরআনিয়া বৌয়াকুর মাদ্রাসার মোহতামিম মাওলানা ইসমাইল নুরপুরী বলেন, আজকের এই সমাবেশ প্রমাণ করলো- সাদ অনুসারীরা বাতিল, গোমরাহ। আমরা চাই, তিনি যেন বাংলার জমিনে পা রাখতে না পারে। তারা যেখানেই যায় সেখানেই রক্ত ক্ষয় হয়।

জামেয়া হোসাইনিয়া মিরপুর মাদ্রাসার মোহতামিম মাওলানা বাহাউদ্দীন জাকারিয়া বলেন, মাওলানা সাদ এমন কিছু বক্তব্য দিচ্ছেন যা একজন ইসলাম প্রচারকের বৈশিষ্ট্য হতে পারে না। তিনি নবীদের সমালোচনা করেছেন, সাহাবা ও দ্বীন ও ইসলাম সম্পর্কে সমালোচনা করেছেন। যে ব্যক্তি এমন কথা বলেন তিনি তাবলিগের আমির হওয়ার যোগ্যতা রাখেন না। তাকে আনার কোনো ষড়যন্ত্র যদি চলে তাহলে তিনি যেদিক দিয়েই আসবেন সেদিক দিয়ে লংমার্চ চলবে।

কাকরাইল মসজিদের মুরুব্বিদের উদ্দেশ্য করে কাকরাইল মসজিদের কোনো স্থান ও বিশ্ব ইজতেমার মাঠ বাতিলপন্থীদের জন্য ছেড়ে না দেওয়ারও আহবান জানান তিনি।

ময়মনসিংহের বিশিষ্ট আলেম মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ সাদী বলেন, কোনো সন্তান বাবাকে হত্যা করলে তার বাবার ওয়ারিশানা যেমন পায় না; তেমনি মাওলানা সাদও তার পিতার আদর্শকে হত্যা করেছেন। তাই তিনিও তার পিতার ওয়ারিশানা পাবেন না।

জামেয়া মাদানিয়া বারিধারা মাদ্রাসার মুহতামিম মুনির হোসেন কাসেমী বলেন, তাবলিগের সৃষ্টি দেওবন্দ থেকে। তাদের হাতেই লালিত-পালিত হচ্ছে। এই তাবলিগ নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে চাইলে আলেম-উলামারা বসে থাকবে না। এখানে অনেক সংগঠনের ওপরে সবাই এসে উপস্থিত হয়েছেন। এটাই প্রমাণ করে আমরা আর যাই ভাগ করি না কেন আমরা ইসলামকে ভাগ করতে পারি না।

উজানীর পীর মাহবুব ইলাহী বলেন, আজকের উপস্থিতি প্রমাণ করে আমাদের মুরুব্বিরা যেভাবে ডাকবে আমরা সেভাবেই সাড়া দেবো। তাই কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণার জন্য এমন সম্মেলনের আহবান জানাচ্ছি আমাদের মুরব্বিদের কাছে।

এর আগে, কওমি মাদরাসাভিত্তিক আলেম-উলামা ও তাবলিগের মুরুব্বিরা একাধিক সংবাদ সম্মেলন করে সর্বস্তরের উলামা-মাশায়েখ ও সাধারণ জনগণকে সম্মেলনে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন।

এদিকে, ২০১৯ সাল থেকে বিশ্ব ইজতেমা দুই পর্বে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। প্রথম পর্বে শুরায়ি নেজামের অধীনে তাবলিগের সাথী, আলেম-উলামা ও সাধারণ মানুষ অংশগ্রহণ করেন এবং দ্বিতীয় পর্বে মাওলানা সাদের অনুসারীরা অংশ নেন। তবে এবার মাওলানা সাদের অনুসারীরা দাবি করছেন, তারা প্রথম পর্বে ইজতেমা করতে চান। এই দাবি নিয়ে শুরায়ি নেজামের তাবলিগের সাথী, কওমি মাদরাসার আলেম-উলামা ও সাধারণ মানুষ বিরোধিতা করেন এবং তাদের পক্ষ থেকে ইসলামি মহাসম্মেলনের আয়োজন করা হয়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও সংবাদ

TikTok

জরুরি হটলাইন