নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলায় চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে ছবির পাইক গ্রামের ধুমচর ছমিরপাইক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে এ ঘটনা হয়।
নিহত জহির উদ্দিন বেচু (৪০) উপজেলার সুন্দলপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর লামছি গ্রামের প্রয়াত মোঃ মোস্তফার ছেলে। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য জানান, নিহত জহির উদ্দিন বেচু একজন বুদ্ধি প্রতিবন্ধী। তিনি সরকারের প্রতিবন্ধী ভাতাও পেতেন।
স্থানীয়রা জানায়, শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে জহির উদ্দিন বেচু প্রথমে ধুমচর ছমিরপাইক মসজিদের তালা ভাঙার চেষ্টা করেন। এ সময় মসজিদের ইমাম জেগে গেলে তিনি সেখান থেকে চলে যান। এরপর বেচু মসজিদের পাশের একটি চায়ের দোকানে প্রবেশের চেষ্টা করলে তা মুঠোফোনে অন্যদের জানান মসজিদের ইমাম। মুহূর্তের মধ্যে আশপাশের লোকজন জড়ো হয়ে দোকান থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় তাকে ধাওয়া করে। এক পর্যায়ে বেচু মাটিতে পড়ে যান। এ সময় তাকে গণপিটুনি দেওয়া হয়।
গুরুতর আহত অবস্থায় দীর্ঘসময় সেখানেই পড়ে ছিলেন তিনি। পরে সকাল ৮টায় আশংকাজনক অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার পথে বেচুর মৃত্যু হয়।
সুন্দলপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মোঃ হানিফ বলেন, ‘জহির উদ্দিন বেচুর কিছুটা মানসিক সমস্যা আছে। সে বুদ্ধি প্রতিবন্ধি হিসেবে সরকারি ভাতা পেয়ে আসছে। চার সন্তানের জনক বেচু দুই–একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া কখনো বড় কোনো চুরি করছে বলে কারও জানা নেই। ঘটনাস্থলের পাশে বেচুর বোন ও খালার বাড়ি এবং সে প্রায় সেখানে যাওয়া–আসা করে।’
কবিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ শাহিন মিয়া বলেন, ‘গণপিটুনিতে এক ব্যক্তির মৃত্যুর খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ২৫০ শয্যা নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনার তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’