• শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:৪২ অপরাহ্ন
  • ইপেপার
শিরোনাম:
আওয়ামী লীগ যেন মিছিল করতে না পারে পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্রশাসন বিএনপির পক্ষে, তাদের অধীনে নির্বাচন সম্ভব নয়: নাহিদ ন্যাশনাল কমেডি পার্টি হয়ে যাচ্ছে এনসিপি: তাসনিম খলিল রাজনীতিতে আসা ভুল ছিল না, নির্বাচন করলে আবার জিতব: সাকিব এবারও নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ দেননি প্রধান উপদেষ্টা: মির্জা ফখরুল আমতলীতে এক বিএনপি কর্মীর বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার থানায় অভিযোগ। আমতলীতে চাদা না দেয়ায় ৬ জনকে কুপিয়ে আহত। অপারেশন ডেভিল হান্ট, আমতলীতে আ লীগ নেতা গ্রেফতার। রায়পুরায় ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রম পরিদর্শন করেন নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম আমতলী চাওড়ায় মেহেদী জামান রাকিব এর ঈদ পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময় ও মটর সাইকেল শোভাযাত্রা।

নারায়ণগঞ্জে লাইসেন্সবিহীন হাসপাতালের ছড়াছড়ি

প্রকাশক / ১৫৯
সোমবার, ৪ মার্চ, ২০২৪

সরকারি নিয়মনীতি এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা উপেক্ষা করে নারায়ণগঞ্জের সর্বত্র গড়ে উঠেছে লাইসেন্সবিহীন ও অনুমোদনহীন শতাধিক ক্লিনিক-হাসপাতাল এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টার। আর এসব প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন খোদ সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা।

এ ছাড়াও চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগসাজশে ক্লিনিক মালিকরা জিম্মি করে রাখছেন রোগীদের। এসব অবৈধ ও লাইসেন্সবিহীন হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিকগুলোর তালিকা তৈরি করেও বন্ধ করতে পারছে না জেলা সিভিল সার্জন।

মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) সকালে সচিবালয়ে সারা দেশে লাইসেন্সবিহীন বেসরকারি হাসপাতাল-ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিকগুলো বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। প্রয়োজনে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও জানিয়েছেন তিনি।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি নিজেও লাইসেন্সবিহীন হাসপাতালের ভুক্তভোগী। সুতরাং আমি কখনোই এ বিষয়ে ছাড় দেব না। বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হাসপাতালের নাম তদন্ত স্বার্থে পরে জানানো হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা জানেন, এরই মধ্যে আমি বলেছি, দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমার অবস্থান থাকবে, তেমনি অনুমোদনবিহীন হাসপাতালের ব্যাপারেও ছাড় দেওয়া হবে না। অবৈধ হাসপাতাল যারই হোক ছাড় দেওয়া হবে না।’ এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ জানুয়ারি মঙ্গলবার নারায়ণগঞ্জের মোট ১১টি হাসপাতাল ও ক্লিনিক বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. এ এফ এম মুশিউর রহমান। কিন্তু বন্ধ ঘোষণা করা হাসপাতালগুলো ঘুরে দেখা গেছে প্রতিটি হাসপাতাল আবারও তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

ইতিমধ্যে লাইসেন্সহীন, সনদ নবায়ন না করা, চিকিৎসা ব্যবস্থাপনায় অনিয়ম, অনুমোদনবিহীন ল্যাব পরিচালনা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে অপারেশন পরিচালনাসহ বিভিন্ন অভিযোগগুলোকে কেন্দ্র করে সারাদেশে বেশ কিছু চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের লিস্টে করে সেগুলো বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে, সেই পরিপ্রেক্ষিতে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন ক্লিনিক-হাসপাতালের প্রায় ২৫ থেকে ৩০টির মতো ক্লিনিক হাসপাতালের কাগজ না থাকার কারণে তা শিগগিরই বন্ধের ঘোষণা হয়েছে।

যা ইতোমধ্যে দেদার চালু কোনোভাবেই বন্ধ করতে সক্ষম হচ্ছে না সিভিল সার্জন। বন্ধ ঘোষিত হাসপাতাল-ক্লিনিক মালিকরা বলছে, পরিবেশ ছাড়পত্র, ফায়ার সার্ভিসের ছাড়পত্র নিয়ে নানা ভোগান্তি পোহাতে হয় যে কারণে আমাদের নতুন লাইসেন্স ও নবায়ন করতে একটু সময় লাগে আর যেহেতু এটা একটি রানিং ক্লিনিক বা হাসপাতালে পরিণত হয়েছে, সেই প্রেক্ষিতে কাগজ তৈরি, অনলাইন বা নবায়নের জন্য তো হাসপাতালটি বন্ধ রাখা যাবে না। অবৈধভাবে সরকারি নিয়ম না মেনে চালু থাকা ক্লিনিক হাসপাতালগুলোকে এক মাস আগে নোটিশ দিলে ও এখনো নারায়ণগঞ্জ শহরের খানপুর এলাকার আয়শা জেনারেল হসপিটাল অ্যান্ড ল্যাব, ইমন ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও অ্যালিস ডায়াগনস্টিক সেন্টার, নারায়ণগঞ্জ ডায়াবেটিস হাসপাতাল নাগবাড়ী, নারায়ণগঞ্জ ডায়াবেটিস হাসপাতাল (ইউনিট-২) নবাব সলিমুল্লাহ রোড,ডায়াবেটিস হাসপাতাল সোনাখালী, সোনারগাঁ চক্ষু হাসপাতাল, স্টাফ লাইফ হাসপাতাল চাষাঢ়া প্রেসিডেন্ট রোড, খানপুরের আহিল ডায়াগনস্টিক সেন্টার, দেওভোগের এনসিসি, এসবিএফ কিডনি ডায়ালাইসিস হাসপাতাল, আড়াইহাজার সেন্ট্রাল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, এ টু জেট ডিজিটাল ও ফয়সাল হাসপাতালসহ নির্দেশনা না মেনেই চালু রয়েছে সকল ছাড়পত্রবিহীন ক্লিনিক-হাসপাতাল-ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো।

আবার অনেক ক্লিনিকের লাইসেন্স রিনিউ করা হয়নি। এমন শহরের আনাচে-কানাচে নোংরা পরিবেশে হুটহাট গড়ে উঠছে ক্লিনিক। সেখানে চিকিৎসার নামে প্রতিনিয়ত অপচিকিৎসা হচ্ছে। রোগীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তাছাড়া এই অবৈধ লিস্টে থাকা এই হাসপাতাল-ক্লিনিকগুলো বিনা লাইসেন্সে এবং স্বাস্থ্য বিভাগকে না জানিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে রোগীদের বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা, অপারেশন চালিয়ে আসছে। কিন্তু সিভিল সার্জনের চোখে ফাঁকি দিয়ে নানাভাবে চলমান রয়েছে অবৈধ হাসপাতালগুলো।

এদিকে এই অবৈধ হাসপাতালের বিষয়ে সচেতন নাগরিকরা বলছেন, যদি এই হাসপাতালে কোনো প্রকারের দুর্ঘটনা ঘটে তাহলে এটার দায়ভার কে নেবে? এদিকে কেউ কেউ বলছে, তারা ওপরে ম্যানেজ করেই তাদের কার্যক্রম অবহৃত রেখেছে। কিন্তু যাদের নামে বন্ধের নির্দেশনা রয়েছে তারা বলছে লাইসন্সের জন্য বহু কিছুর প্রয়োজন হয়। যাকে ঘিরে নানা জায়গায় নানা সময় লাগে। কেউ সিভিল সার্জনের বন্ধের ঘোষণার কোনো গুরুত্ব রাখছে না।

এ বিষয়ে দেওভোগ নাগবাড়ী ডায়াবেটিস হাসাপাতাল ও নবাব সলিমুল্লাহ রোডের ডায়াবেটিক হাসপাতালের সেক্রেটারি দেলোওয়ার হোসেন চুন্নু বলেন, আমরা এখানে সাধারণ মানুষের হয়ে কাজ করি এটা দীর্ঘ পুরোনো একটি হাসপাতাল এই হাসপাতালটি মানুষের সুচিকিৎসা স্বল্প মূল্যেতে দেওয়ার একটি প্রতিষ্ঠান। দীর্ঘদিন সরকারি নিয়ম মেইেন কিন্তু কার্যক্রম আমাদের অবহৃত রয়েছে। কিন্তু কয়েক মাস হয়েছে আমাদের হাসপাতালটির লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। আর তা নবায়ন করা হয়নি, যাকে ঘিরে সিভিল সার্জন অফিস থেকে আমাদের জন্য একটি সাধারণ নোটিশ পাঠানো হয়েছে, শুধু অবগত করা হয়েছে কাগজ নবায়ন করার জন্য তা ছাড়া বন্ধ করার বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। এরই পাশাপাশি আমাদের ইউনিট-২ ও যেহেতু শহরে সেভাবে সেটা ও চলমান রয়েছে। আমরা সিভিল সার্জনের সাথে যোগাযোগ করেছি সে বলেছে, আমাদের কাগজ অনলাইন করতে হবে সেভাবে আমরা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। শিগগিরই আমাদের লাইসেন্স নবায়ন হয়ে চলে আসবে।

শহরের প্রেসিডেন্ট রোডের স্টার লাইফ হাসপাতালের মালিক মো. সেলিম বলেন, আমাদের লাইসেন্সের কার্যক্রম অবহত রয়েছে। আমরা সিভিল সার্জনের সঙ্গে যোগযোগ করেই আমাদের হাসপাতাল চালু রেখেছি। যেহেতু আমার কাগজপত্র আছে কিন্তু একটু সমস্যা আছে।

পরিবেশ অধিদপ্তর কাগজের সেই পরিপ্রেক্ষিতে সিভিল সার্জন আমাদের বলেছেন, আমাদের কার্যক্রম অবহৃত রাখতে। খানপুরের আহিল ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কর্তৃপক্ষ কবিতা আক্তার বলেন, আমরা কাগজপত্র করতে দিয়েছি আমাদের কাগজপত্র এখনো তৈরি হয়ে আসেনি। আর ইতোমধ্যে বা পূর্বে এখনো কোন বন্ধের নোটিশ দেয়নি সিভিল সার্জন সেই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছি। দেওভোগের এনসিসি, এসবিএফ কিডনি ডায়ালাইসিস হাসপাতাল ও চলমান অবস্থায় রয়েছে নেই কোনো তোয়াক্কা।

লাইসেন্স না থাকার কারণে বন্ধের বিষয়ে জানতে চাইলে হাসপাতালটির ম্যানেজার বায়েজিদ হোসেন বলেন, আমাদের কোনো বন্ধের নোটিশ দেওয়া হয়নি। যার কারণে আমরা আমাদের কার্যক্রম চালু রেখেছি। আমরা এখনো আমাদের লাইসেন্সের বিষয়ে কিছু জমা দেইনি।

বন্ধ ঘোষণার পরও কেনো হাসপাতালগুলো খোলা রয়েছে- এ বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ জেলার সিভিল সার্জন ডা. এ এফ এম মুশিউর রহমান কালবেলাকে বলেন, সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক যেসকল হাসপাতালের সরকারি অনুমোদন বা লাইসেন্স নেই, পরিবেশ ছাড়পত্রসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নেই সেসকল হাসপাতাল বন্ধ করার ঘোষণা দিয়ে কয়েকটিতে অভিযান পরিচালনা করেছি। অভিযানে কয়েকটি সিলগালাসহ জরিমানা করেছি। কিন্তু অভিযানের পরে আবারও যদি তারা অবৈধ হাসপাতালগুলো খুলে থাকে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেব।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও সংবাদ

TikTok

জরুরি হটলাইন