
দিনাজপুর প্রতিনিধি:
দিনাজপুরের কাঞ্চন কলোনীর জুলেখা আক্তার অনামিকা (জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী) নামের এক নারীর বিরুদ্ধে টিকটক ও ফেসবুক মেসেঞ্জার ব্যবহার করে অনৈতিক কর্মকাণ্ড এবং একাধিক পুরুষের সাথে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। সেলুন ব্যবসায়ী মাহাতাব মিয়ার কন্যা হলেও তার বিলাসবহুল জীবনযাত্রা ও আচরণে তার পারিবারিক প্রেক্ষাপট বোঝা কঠিন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, মাত্র ১৩ বছর বয়সে মাসুদের সাথে বিয়ে হয় অনামিকার। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই তিনি একের পর এক পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন বলে অভিযোগ রয়েছে। তার স্বামী মাসুদ রানাও তাকে ব্যবহার করে যৌন ব্যবসা চালাতেন বলে জানা গেছে। পঞ্চম শ্রেণী পাশ হলেও নিজেকে এইচএসসি পাশ দাবি করে এবং ইংরেজিতে বার্তা পাঠিয়ে ছেলেদের বিশ্বাস অর্জন করার চেষ্টা করতেন অনামিকা।
একাধিক পুরুষের সাথে সম্পর্ক ও প্রতারণা:
রংপুরের মামুন নামের এক যুবকের সাথে দিনাজপুরের বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হন অনামিকা। মামুন তাদের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ফেসবুকে শেয়ার করলে তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
বগুড়ার রকি ইসলাম নামের আরেক যুবকের সাথেও স্বামী-সন্তান রেখে পালিয়ে গিয়ে রাত্রি যাপন করেন তিনি। পরে তার ভাই তারিফ তাকে কৌশলে ফিরিয়ে আনেন। রকি ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, অনামিকার সাথে তার শারীরিক সম্পর্ক ছিল এবং এর জেরে তার সংসারে অশান্তি নেমে আসে। রকির স্ত্রী তাদের মেসেঞ্জারের কথোপকথন দেখে ফেলে এবং রকির বিরুদ্ধে মামলা করেন, যার ফলে রকিকে কিছুদিন জেলও খাটতে হয়। রকি আরও অভিযোগ করেন, অনামিকা বিভিন্ন সময়ে তার কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। সম্প্রতি ২০ হাজার টাকা নেওয়ার পর তাকে ফেসবুক থেকে ব্লক করে দেন এবং তাদের একসাথে তোলা ১৪৭টি ছবিও নিয়ে নেন। রকির মতে, অনামিকা পাঁচটি ভিন্ন ফেসবুক আইডি ব্যবহার করেন।
সৌদি প্রবাসী এবং স্থানীয় যুবকের সাথে সম্পর্ক:
জুয়া ও মাদকাসক্ত স্বামী মাসুদ রানাকে ২০২৪ সালের নভেম্বরে তালাক দিয়ে কুমিল্লার সৌদি প্রবাসী রবিউল ইসলামকে ফেসবুকে প্রেমের ফাঁদে ফেলেন অনামিকা। এরপর কাঞ্চন কলোনীর টুটুল নামের এক বিবাহিত যুবকের সাথেও সম্পর্কে জড়ান। টুটুলের স্ত্রীর কাছে বিষয়টি ধরা পড়লে তিনি সংসার بچানোর জন্য অনামিকার কাছে ক্ষমাও চান।
পরিবারের সহযোগিতার অভিযোগ:
অভিযোগ উঠেছে, অনামিকার এসব কর্মকাণ্ডে তার বাবা মাহাতাব ও মা তাহেরা বেগমের সহযোগিতা রয়েছে। টুটুলের সাথে ঘটনাটি জানাজানি হলে অনামিকা ঢাকায় তার বোনের বাসায় পালিয়ে যান, কিন্তু সেখানেও এক সৌদি প্রবাসীর সাথে ফোনে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। বিষয়টি জানার পর তার বোন তাকে বাসা থেকে বের করে দেন। এরপর পঞ্চগড়ে গিয়ে একটি চা বাগানে কাজ শুরু করলেও তার মা ও ভাই তাকে দিনাজপুরের বাসায় ফিরিয়ে আনেন। অভিযোগ রয়েছে, তার ভাই তারিফ প্রথমে তার মোবাইল ফোন কেড়ে নিলেও, পরে তার মা তাকে আবার মোবাইল ফোন দিয়ে ছেলেদের সাথে কথা বলতে সহযোগিতা করেন।
এলাকার এক যুবক জানান, বিয়ের আগেও কাঞ্চন কলোনীর মিলনের সাথে আপত্তিকর অবস্থায় ধরা পড়ার পর খালাতো ভাই মাসুদের সাথে তার বিয়ে দেওয়া হয়।
বর্তমানে অনামিকা ও তার মা এলাকায় প্রচার করছেন যে, এক সৌদি প্রবাসীর সাথে মোবাইলের মাধ্যমে তার বিয়ে হয়ে গেছে, যা তার চলমান কর্মকাণ্ড ঢাকার একটি কৌশল বলে মনে করছেন এলাকাবাসী।